গোপালগঞ্জে সংঘর্ষে নিহতদের ঘটনায় বিচার দাবি, শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির ওপর হামলার অভিযোগ নাহিদ ইসলামের

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই, ২০২৫, ৪:৪৪ অপরাহ্ণ
গোপালগঞ্জে সংঘর্ষে নিহতদের ঘটনায় বিচার দাবি, শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির ওপর হামলার অভিযোগ নাহিদ ইসলামের

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিকে ঘিরে সংঘর্ষে চারজন নিহত হওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দলের আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম। বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) রাতে নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক প্রোফাইলে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি বলেন, এনসিপি কোনো বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডকে সমর্থন করে না, এবং সরকারের ব্যর্থতাই এই ঘটনার জন্য দায়ী।

নাহিদ লেখেন, “আমরা কোনো যুদ্ধের আহ্বান নিয়ে গোপালগঞ্জে যাইনি। আমাদের পূর্বঘোষিত শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি ছিল। কিন্তু মুজিববাদী সন্ত্রাসীরা পরিকল্পিতভাবে আমাদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালায়। প্রশাসন ও গোয়েন্দা সংস্থা যদি সময়মতো ব্যবস্থা নিত, তাহলে এ ধরনের পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না।”

তিনি জানান, “আমরা চারজনের মৃত্যুর কথা শুনেছি। আমরা কোনো বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড সমর্থন করি না, প্রত্যাশাও করি না। সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অবশ্যই বিচারিক প্রক্রিয়ায় ব্যবস্থা নিতে হবে। ঘটনার দায় সরকার ও প্রশাসনের। আমরা এই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত এবং দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি করছি।”

নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, গোপালগঞ্জ নিয়ে এনসিপির অবস্থান আগেই পরিষ্কার করা হয়েছে। তার ভাষায়, “আওয়ামী লীগ যুগের পর যুগ গোপালগঞ্জবাসীর জীবনে দুর্ভোগ ডেকে এনেছে, মুক্তিযুদ্ধকে কলুষিত করেছে এবং সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গেও বেইনসাফি করেছে। এই অবস্থার অবসান আমরা ঘটাবো।”

তিনি অভিযোগ করেন, “ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা গোপালগঞ্জে পরিকল্পিত হামলা চালিয়েছে। অথচ তাদের গ্রেফতার করা হয়নি। যারা গ্রেফতার হয়েছে, তারাও কোর্ট থেকে জামিন নিচ্ছে বা থানা থেকে পালিয়ে যাচ্ছে। প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে এখনো ফ্যাসিবাদের দোসর ও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা ঘাপটি মেরে আছে।”

নাহিদের দাবি, “নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে গোপালগঞ্জে এসেছিল। সকালবেলার নাশকতার পরও প্রশাসনের অনুমতি ও নিরাপত্তা ক্লিয়ারেন্স পেয়েই আমরা সেখানে প্রবেশ করি। আমরা পদযাত্রা করিনি, শুধু পথসভা করেছি। বিভিন্ন উপজেলা থেকে আমাদের নেতাকর্মীদের আসতে বাধা দেওয়া হয়েছে, বাস আটকে দেওয়া হয়েছে।”

তিনি বলেন, “আমরা শান্তিপূর্ণভাবে পথসভা শেষ করে ফিরে যাওয়ার পথে সশস্ত্র হামলার শিকার হই। প্রশাসনের দেওয়া নির্দেশনা মেনে আমরা সেখান থেকে সরে আসি।”

স্ট্যাটাসের শেষাংশে তিনি দৃপ্ত ভাষায় বলেন, “আমরা গোপালগঞ্জে গিয়েছিলাম, আবারও যাব। জীবিত থাকলে গোপালগঞ্জের প্রতিটি উপজেলায়, প্রতিটি গ্রামে আমরা কর্মসূচি পালন করব। শহীদ বাবু মোল্লা, শহীদ রথীন বিশ্বাসের গোপালগঞ্জকে আমরা পুনরুদ্ধার করব। বাংলাদেশের এক ইঞ্চি মাটিও মুজিববাদীদের হাতে যাবে না—ইনশাআল্লাহ।”

তিনি তাদের কর্মসূচির ওপর হামলার প্রতিবাদে যারা রাস্তায় নেমেছেন বা প্রতিবাদ জানিয়েছেন, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, “দেখা হবে ফরিদপুরে পদযাত্রায়।”