তিন পদে একই ব্যক্তি থাকা নিয়ে বাধা দেখছে না বিএনপি

ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ নিয়ে আলোচনা চললেও প্রধানমন্ত্রী, সংসদ নেতা ও দলীয় প্রধান—এই তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পদে একই ব্যক্তি থাকা নিয়ে কোনো বাধ্যবাধকতা থাকা উচিত নয় বলে মনে করে বিএনপি। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, এটি একটি রাজনৈতিক দলের গণতান্ত্রিক অধিকার, এবং এক্ষেত্রে কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা উচিত নয়। শনিবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, কে প্রধানমন্ত্রী হবেন, তা নির্ধারণ করবে সংসদীয় দল। দলীয় প্রধান মানেই যে তিনিই হবেন প্রধানমন্ত্রী—এমন বাধ্যবাধকতা না থাকলেও তার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পথ বন্ধ রাখা উচিত নয়। তিনি যুক্তরাজ্যের উদাহরণ দিয়ে বলেন, সেখানে দলের প্রধান সাধারণত প্রধানমন্ত্রী হন। এটা সংসদীয় দলের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করে এবং কোনো আইন বা নিয়মে তাকে অযোগ্য ঘোষণা করা হয় না। বিএনপিও এই যুক্তিতেই নিজের অবস্থান তুলে ধরেছে।
তিনি মনে করেন, যদি পার্লামেন্টারি পার্টি কারও নাম প্রস্তাব করে, তবে সেই ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন, সে তিনি দলীয় প্রধান হোন বা না হোন। কিন্তু শুধুমাত্র দলীয় প্রধান হওয়ার কারণে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ না দেওয়া হলে তা গণতান্ত্রিক চর্চার পরিপন্থী হবে। এ নিয়ে বিএনপি লিখিত প্রস্তাব জমা দিয়েছে বলেও জানান তিনি।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহালের বিষয়ে বিএনপি আদালতের রায়ের অপেক্ষায় আছে বলেও উল্লেখ করেন সালাহউদ্দিন আহমেদ। তার ভাষায়, আপিল বিভাগের রিভিউ পর্যায়ে বিষয়টি বিচারাধীন, এবং তারা আশা করছেন আদালত রায়ের মাধ্যমে এই ব্যবস্থা আবার ফিরিয়ে দেবে। তবে প্রয়োজন হলে সংসদ নতুন আইন প্রণয়ন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার চালু করতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এই প্রক্রিয়ার কাঠামো নিয়েও বিএনপি কিছু প্রস্তাব দিয়েছে। আলোচনায় উঠে এসেছে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠনের প্রস্তাব, যারা প্রধান উপদেষ্টার নাম চূড়ান্ত করবে। এই কমিটিতে প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, বিরোধীদলীয় নেতা, বিরোধীদলীয় হুইপ এবং তৃতীয় বৃহত্তম দলের একজন প্রতিনিধি থাকার প্রস্তাব করা হয়েছে। তারা জনগণ ও দলগুলোর কাছ থেকে নাম আহ্বান করে র্যাংকড চয়েস পদ্ধতিতে একজন নিরপেক্ষ নাগরিককে নির্বাচন করবেন।
প্রধান উপদেষ্টা ৯০ দিনের জন্য নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করবেন, তবে জরুরি পরিস্থিতিতে আরও ৩০ দিন সময় বাড়ানো যেতে পারে। যদিও এই দায়িত্ব হবে সীমিত ও রুটিন কার্যক্রমের মধ্যে সীমাবদ্ধ। সালাহউদ্দিন আহমেদ আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, বাস্তবতা ও আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতার আলোকে একটি যৌক্তিক সমাধানে পৌঁছানো সম্ভব হবে।
আপনার মতামত লিখুন