বন সংরক্ষণে উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার, তবে ট্যুরিজম নিয়ন্ত্রণে প্রতিবন্ধকতা: উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: শুক্রবার, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ২:২২ অপরাহ্ণ
বন সংরক্ষণে উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার, তবে ট্যুরিজম নিয়ন্ত্রণে প্রতিবন্ধকতা: উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানিয়েছেন, দেশের পাহাড়ি ও উপকূলীয় বনসহ বিপন্ন বনাঞ্চল রক্ষায় সরকার নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। তবে বন সংরক্ষণের ক্ষেত্রে পর্যটন নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে নানা প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে।

শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ‘ইনডিজিনাস প্লান্টস ফর সাসটেইনেবল এনভায়রনমেন্ট’ শীর্ষক বার্ষিক উদ্ভিদবিজ্ঞান সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ ও বাংলাদেশ বোটানিক্যাল সোসাইটি যৌথভাবে আয়োজিত এ সম্মেলনে সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান থেকে দুই শতাধিক প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন। সম্মেলনের টেকনিক্যাল সেশনে গবেষকরা বিভিন্ন গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান বলেন, দেশের সার্বিক বোটানিক্যাল ব্যবস্থাপনায় ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে কিছু ভালো উদ্যোগ দেখা গেলেও সরকারিভাবে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। জনগণের মধ্যে বোটানিক্যাল গার্ডেনের গুরুত্ব তুলে ধরতে হবে, কারণ এটি শুধু বিনোদনের স্থান নয়, বরং প্রকৃতি সংরক্ষণের একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র।

তিনি আরও জানান, শালবন পুনরুদ্ধারের জন্য একটি মহাপরিকল্পনা গ্রহণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শুধু দেশীয় গাছ রোপণ করলেই হবে না, এগুলো রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা করাও জরুরি। সামাজিক বনায়নের মাধ্যমে প্রাকৃতিক বন পুরোপুরি ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়, তাই কোনো বনায়ন প্রকল্পের কারণে প্রাকৃতিক বন ধ্বংস করা যাবে না।

ঢাকাসহ দেশের শহরাঞ্চলে সবুজায়ন ও আরবান ফরেস্ট্রি প্রসারে পরিকল্পিত উদ্যোগ নেওয়ার ওপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, সংবিধানে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের অঙ্গীকার করা হয়েছে, যা বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। এছাড়া, অবৈধ দখলমুক্ত করে পুনরায় বনায়ন করতে হবে এবং কোনো উন্নয়ন প্রকল্পের কারণে বন উজাড় হলে তার বিকল্প হিসেবে সঙ্গে সঙ্গে বৃক্ষরোপণ নিশ্চিত করতে হবে।

সম্মেলনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, অপরিকল্পিত নগরায়ণের কারণে দেশের মূল্যবান প্রাকৃতিক সম্পদ ধ্বংস হচ্ছে। একসময় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রচুর শাল গাছ ও বন্যপ্রাণী দেখা যেত, যা এখন আর তেমন নেই। আমরা ধীরে ধীরে প্রকৃতি থেকে দূরে সরে যাচ্ছি, যা আমাদের নিজেদের জন্যই বিপদ ডেকে আনছে।

সম্মেলনে বাংলাদেশ বোটানিক্যাল সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক এম. আজিজুর রহমানের সভাপতিত্বে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক এম. মাহফুজুর রহমান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সোহেল আহমেদ এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. আব্দুর রব।