মন্ত্রী-সচিব সংখ্যা কমিয়ে মন্ত্রণালয় একীভূত করার সুপারিশ।

জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন সরকারী মন্ত্রী ও সচিবের সংখ্যা কমিয়ে মন্ত্রণালয় একীভূত করার সুপারিশ করেছে। এই উদ্যোগের লক্ষ্য প্রশাসনিক দক্ষতা বৃদ্ধি করা, তবে বিশ্লেষকরা এর বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার ছয়টি খাতের সংস্কারের জন্য পৃথক কমিশন গঠন করে, যার অংশ হিসেবে ৫ ফেব্রুয়ারি জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।
প্রস্তাবিত পরিবর্তনের মধ্যে রয়েছে, মন্ত্রীর সংখ্যা ২৩ জনে সীমাবদ্ধ করা (যার মধ্যে ২ জন টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী), প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীর সংখ্যা সর্বোচ্চ ১২ জন করা, এবং সচিব ও সমমর্যাদার কর্মকর্তার সংখ্যা ৮০ থেকে ৬০ তে নামিয়ে আনা। এছাড়াও, একাধিক বিভাগ থাকা মন্ত্রণালয়ে মুখ্য সচিব নিয়োগের প্রস্তাব করা হয়েছে।
এ কে এম এনামুল হক এই উদ্যোগকে ইতিবাচক মনে করেছেন এবং জানান যে, সংখ্যা কমালে নীতিনির্ধারণ সহজ হবে এবং প্রশাসন আরও কার্যকর হবে। তবে, কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোহাম্মদ মুজাহিদুল ইসলাম বাস্তবায়ন নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন এবং বলেন, কিছু সুপারিশ বাস্তবতার ভিত্তিতে নয়, কল্পনার ওপর নির্ভর করে। তিনি আরও জানান, প্রশাসন ক্যাডার এবং অন্যান্য ক্যাডারের মধ্যে মতবিরোধও বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।
কমিশন কিছু মন্ত্রণালয় একীভূত করারও সুপারিশ করেছে, যেমন শিল্প, বাণিজ্য, পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়কে একীভূত করে ‘শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়’, সড়ক যোগাযোগ, সেতু ও রেল মন্ত্রণালয়কে একত্রিত করে ‘যোগাযোগ মন্ত্রণালয়’ এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়কে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব। বিশ্লেষকদের মতে, এই সুপারিশগুলি বাস্তবায়িত হলে সরকারের খরচ কমবে এবং প্রশাসনের স্বচ্ছতা ও কার্যকারিতা বাড়বে। তবে, রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেই অন্তর্বর্তী সরকারকে এই সংস্কার বাস্তবায়ন করতে হবে।
আপনার মতামত লিখুন