টাকার গতিপথ সীমিত করার লক্ষ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ৬:৫৭ অপরাহ্ণ
টাকার গতিপথ সীমিত করার লক্ষ্য

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকার বাজারে নগদ টাকার প্রবাহ কমানোর চেষ্টা করছে। এজন্য আমানতের সুদের হার বৃদ্ধি করা হয়েছে, পাশাপাশি ঋণের সুদও বাড়ানো হয়েছে। যদিও ঋণের সুদ বাড়ানোর ফলে বিনিয়োগের ওপর কিছু প্রভাব পড়তে পারে, তবুও বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সুদ বাড়ানোর ফলে জুলাই-ডিসেম্বর ছয় মাসে ব্যাংক খাতে ৩৪ হাজার কোটি টাকার আমানত বৃদ্ধি পেয়েছে এবং মূল্যস্ফীতির চাপ কিছুটা কমেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক আগামী মার্চ মাসের মধ্যে বাজার থেকে আরও অন্তত ৫ হাজার কোটি টাকা তুলে নিতে চায়, তবে রমজান ও ঈদুল ফিতরের কারণে কিছুটা বাধা আসতে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, জানুয়ারি ২০২৫-এ সার্বিক মূল্যস্ফীতি ৯.৯৪ শতাংশে নেমেছে, যা ডিসেম্বরে ছিল ১০.৮৯ শতাংশ। তবে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি কমলেও, খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর আশা করছেন, সবজির দাম কমতে থাকলে মূল্যস্ফীতির চাপ আরও কমবে। তিনি জানান, বছর শেষে গড় মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশে নামানোর লক্ষ্য রয়েছে এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

এদিকে, সরকার ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তুতি শুরু করেছে, যাতে অর্থনীতির গতি ফিরিয়ে আনা এবং বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বাড়ানোর উদ্যোগ থাকবে। এপ্রিলে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) আন্তর্জাতিক ইনভেস্টমেন্ট সামিটের আয়োজন করবে, যা থেকে অন্তত ১ বিলিয়ন ডলার বিদেশি বিনিয়োগ আশা করা হচ্ছে।

ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলছেন, বিনিয়োগ বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি কমানো যাবে, তবে একমাত্র সুদহার বাড়িয়ে বাজারে টাকার প্রবাহ কমানো যথেষ্ট নয়। সরকার আশা করছে, আগামী বাজেটে কিছু নীতি সিদ্ধান্ত নিয়ে মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশে নামানো সম্ভব হবে। বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ এবং এডিবি পরামর্শ দিয়েছে, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ না হলে অর্থনীতি সংকুচিত হতে পারে।