আধুনিকতার ছোঁয়ায় রাশিয়ার ঐতিহ্যবাহী ক্রেস্টি কারাগার

ক্রেস্টি কারাগারের ইতিহাস বেশ পুরোনো, যা বলশেভিক বিপ্লবের নেতা লিওন ট্রটস্কির মতো গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বন্দি রাখার জন্য ব্যবহৃত হতো। সোভিয়েত আমলে রাজবন্দিদেরও এখানে আটক রাখা হতো। দীর্ঘ সময় ধরে এটি একটি কুখ্যাত বন্দিশালা হিসেবে পরিচিত ছিল। তবে ২০১৭ সালে পুরোনো কারাগারটি বন্ধ করে বন্দিদের আধুনিক ক্রেস্টি-টু কারাগারে স্থানান্তর করা হয়।
নতুন ক্রেস্টি-টু কারাগার নির্মাণে কয়েকশত কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে এবং এতে সংযোজিত হয়েছে আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা। কারাগারটিতে রয়েছে রেস্টুরেন্ট, কনসার্ট হল, জাদুঘর ও হাসপাতাল, যা সাধারণ কারাগারের ধারণার বাইরে। বন্দিদের চলাচলের সুবিধার জন্য দীর্ঘ করিডরগুলোতে স্বয়ংক্রিয় চলার পথ (অটোওয়াক) বসানো হয়েছে। এই উন্নত পরিবেশ দেখে বন্দিদের মধ্যেও সন্তুষ্টি দেখা গেছে। কারাবন্দি ইয়ান জানিয়েছেন, এখানে ঠিক তেমনই ব্যবস্থা রাখা হয়েছে, যেমনটি হওয়া উচিত।
ক্রেস্টি-টু কারাগারের অপারেশনাল ডিপার্টমেন্টের প্রধান নিকিতা ইলিন জানিয়েছেন, এটি পুরোনো কারাগারের তুলনায় সম্পূর্ণ আলাদা। প্রায় দেড় দশক আগে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নির্দেশে এর আধুনিকায়ন শুরু হয়, যা শেষ পর্যন্ত একটি উন্নত বন্দি কেন্দ্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। নতুন কারাগারটি নির্মাণের ফলে কয়েদি ধারণক্ষমতা চার গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। আগে যেখানে ৯৬০টি সেলে ১,১৫০ জন বন্দি রাখা হতো, সেখানে এখন চার হাজার কয়েদির জন্য পর্যাপ্ত জায়গা রয়েছে।
ক্রেস্টি কারাগারের নামকরণ এর বিশেষ স্থাপত্যশৈলীর জন্য করা হয়েছে, কারণ এটি দুটি ক্রস আকৃতির ভবন নিয়ে গঠিত। পুরোনো ক্রেস্টি কারাগার কুখ্যাত হলেও নতুন সংস্করণটি একটি অত্যাধুনিক বন্দি কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠেছে। এই কারাগার বিশ্বব্যাপী প্রচলিত ধারণার বাইরে গিয়ে বন্দিদের জন্য একটি আরামদায়ক ও উন্নত পরিবেশ তৈরি করেছে, যা একে অন্যান্য কারাগার থেকে ব্যতিক্রমী করে তুলেছে।
আপনার মতামত লিখুন