জার্মানিতে বিমানবন্দর শ্রমিকদের আকস্মিক ধর্মঘটে শত শত ফ্লাইট বাতিল

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: সোমবার, ১০ মার্চ, ২০২৫, ৫:৫৬ অপরাহ্ণ
জার্মানিতে বিমানবন্দর শ্রমিকদের আকস্মিক ধর্মঘটে শত শত ফ্লাইট বাতিল

জার্মানিতে বেতন-ভাতা সংক্রান্ত সমস্যার কারণে বিমানবন্দর শ্রমিকদের আকস্মিক ধর্মঘটে শত শত ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। রোববার (৯ মার্চ) হামবুর্গ বিমানবন্দর থেকে দেশব্যাপী এ ধর্মঘটের সূচনা হয়, যা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।

ফ্লাইট কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হওয়ায় কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের ফ্রাঙ্কফুট, মিউনিখ ও বার্লিনের মতো প্রধান বিমানবন্দর এড়িয়ে বিকল্প উপায়ে ভ্রমণের পরামর্শ দিয়েছে। দেশটির অন্যতম ব্যস্ত বিমানবন্দর ফ্রাঙ্কফুট জানিয়েছে, পরিস্থিতির কারণে অনেক যাত্রী তাদের নির্ধারিত গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছেন না।

ধর্মঘটের নেতৃত্ব দিচ্ছে জার্মানির পাবলিক সেক্টর ও পরিবহন শ্রমিকদের সংগঠন ভারদি। সংগঠনটি বিমানবন্দর শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধি, কাজের পরিবেশ উন্নয়ন এবং অতিরিক্ত সময়ের কাজের নিয়ম বাতিলের দাবি জানিয়েছে। তাদের দাবি অনুযায়ী, শ্রমিকদের বেতন ৮ শতাংশ বাড়াতে হবে অথবা মাসিক ৩৫০ ইউরো বেশি দিতে হবে, পাশাপাশি অতিরিক্ত বোনাসও প্রদান করতে হবে।

জার্মান মিডিয়া জানিয়েছে, এই ধর্মঘটের ফলে হাজার হাজার ফ্লাইট বাতিল হতে পারে এবং প্রায় ৫ লাখ যাত্রী সমস্যার সম্মুখীন হবেন। জার্মানির জাতীয় বিমান সংস্থা লুফথানসা জানিয়েছে, তাদের বহরের বহু ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে, এবং যেগুলো চালু রয়েছে সেগুলোর সময়সূচি বিপর্যস্ত হয়েছে। মিউনিখ বিমানবন্দরও সতর্ক করেছে যে সারাদেশে ফ্লাইট শিডিউল ব্যাপকভাবে কমে গেছে।

হামবুর্গ বিমানবন্দরের মুখপাত্র কাতজা ব্রম জানিয়েছেন, সোমবার ১৪৩টি ফ্লাইট ইতোমধ্যেই বাতিল করা হয়েছে। ছুটির মৌসুমের শুরুতে এমন আকস্মিক ধর্মঘট অযৌক্তিক বলে মনে করছেন তিনি। তার মতে, শ্রমিকদের দাবি নিয়ে আলোচনার সুযোগ থাকা সত্ত্বেও বিনা নোটিশে ধর্মঘট ডাকায় যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

এদিকে, শ্রমিক সংগঠন ভারদির মুখপাত্র জার্মান মিডিয়াকে বলেছেন, নিয়োগকর্তাদের কাছ থেকে উপযুক্ত কাজের পরিবেশ ও ন্যায্য বেতন আদায়ের জন্য এই ধর্মঘট প্রয়োজনীয় ছিল।

ফ্রাঙ্কফুট বিমানবন্দরের ১,৭৭০টি ফ্লাইটের মধ্যে অনেকগুলো ইতোমধ্যে বাতিল করা হয়েছে। মিউনিখেও একই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। যাত্রীরা বিমানবন্দরে লাগেজ চেক-ইন করলেও ফ্লাইট বাতিল হওয়ায় তাদের লাগেজ ফেরত পেতে সমস্যা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পাবলিক ব্রডকাস্টার এনডিআর। এছাড়া, ধর্মঘটের কারণে হ্যানোভার বিমানবন্দরের বিমান ট্রাফিক সিস্টেমেও অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।

শুধু বিমানবন্দর নয়, ভারদির আহ্বানে বার্লিনসহ কয়েকটি শহরে ময়লা সংগ্রহের কাজও বন্ধ রয়েছে। শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে মালিকপক্ষ জানিয়েছে, তাদের পক্ষে এসব শর্ত মেনে নেওয়া সম্ভব নয়।

পরিস্থিতি মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় সরকার ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষ উভয়পক্ষের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। পরবর্তী বৈঠক আগামী শুক্রবার পটসডামে অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে।