তুরস্কের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী একরেম ইমামোগলু গ্রেপ্তার, বিক্ষোভে উত্তাল দেশ

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী একরেম ইমামোগলুকে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়েছে, এবং গ্রেপ্তারের ঘটনার পর দেশটিতে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়েছে।
ইমামোগলু, যিনি তুরস্কের অন্যতম প্রধান শহর ইস্তাম্বুলের মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন, তাকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে মেয়রের পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়। তিনি রিপাবলিকান পিপলস পার্টি (সিএইচপি)-র নেতা।
বিবিসি জানিয়েছে, ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য তার নাম রোববার দলের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করার কথা ছিল, তবে সে দিনেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার দেখানোর আগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাকে আটক করে। ইমামোগলুর বিরুদ্ধে ‘অপরাধমূলক সংগঠন প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনা, ঘুস গ্রহণ, চাঁদাবাজি, বেআইনিভাবে ব্যক্তিগত তথ্য রেকর্ড এবং টেন্ডার জালিয়াতির’ অভিযোগ আনা হয়েছে। তিনি এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং বলেছেন, এগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
হেফাজতে নেওয়ার আগে এক্স অ্যাকাউন্টে ইমামোগলু লেখেন, “আমি কখনো মাথা নত করবো না।” তার গ্রেপ্তারির বিরুদ্ধে তুরস্কে এক দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ শুরু হয়েছে, যা পাঁচ রাত ধরে চলমান ছিল।
এদিকে, এরদোয়ান এই বিক্ষোভের নিন্দা জানিয়ে সিএইচপি’কে শান্তি বিঘ্নিত করার এবং জনগণের মধ্যে বিভক্তি তৈরির চেষ্টা করার অভিযোগ করেছেন। গত বুধবার দুর্নীতি এবং সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে সহায়তার অভিযোগে ১০৫ জনের সাথে ইমামোগলুকেও আটক করা হয়েছিল, যাদের মধ্যে অন্যান্য রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক এবং ব্যবসায়ীও রয়েছেন।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোববার রাতে তুরস্কজুড়ে এক দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ অস্থিরতা দেখা গেছে। বিক্ষোভকারীদের ওপর কাঁদুনে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছোড়া হয়েছে এবং লাখো মানুষ বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে।
এটি সমালোচকদের মতে, এরদোয়ানের দুই দশকের বেশি সময় ধরে শাসনকাল দীর্ঘায়িত করার প্রচেষ্টা। তবে নতুন এই বিক্ষোভের ফলে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান চাপে পড়েছেন বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন