ইরানে হামলায় ট্রাম্পের আপত্তি, তবুও হামলার পরিকল্পনায় নেতানিয়াহু সরকার

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, আপাতত ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো সমর্থন নেই। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে এ কথা সরাসরি জানানো হয়েছে। তবে ইসরায়েলের উগ্র ইহুদিবাদী সরকার আগামী মাসগুলোতে তেহরানে সীমিত সামরিক হামলার পরিকল্পনা করছে।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ইসরায়েলি সরকারের ঘনিষ্ঠ এক কর্মকর্তা ও আরও দুই বিশ্বস্ত সূত্রের বরাতে তারা এই তথ্য পেয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, গত কয়েক মাস ধরেই ইসরায়েল যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসনের কাছে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলার জন্য একাধিক বিকল্প পরিকল্পনা উপস্থাপন করেছে। এতে বিমান হামলা এবং কমান্ডো অভিযানের প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত ছিল। তবে এসব হামলা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে দীর্ঘমেয়াদে নয়, কিছু সময়ের জন্য পেছাতে পারবে।
নিউইয়র্ক টাইমসের একটি প্রতিবেদনের বরাতে জানা যায়, হোয়াইট হাউসে আয়োজিত এক বৈঠকে ট্রাম্প নেতানিয়াহুকে জানান, যুক্তরাষ্ট্র ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক আলোচনাকে প্রাধান্য দিচ্ছে এবং বর্তমানে তেহরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর হামলার পরিকল্পনাকে সমর্থন করছে না।
তবুও, নেতানিয়াহুর প্রশাসন মনে করছে—যুক্তরাষ্ট্রের বড় ধরনের সহায়তা ছাড়াই তারা একটি সীমিত হামলা চালাতে পারে। ইসরায়েলের প্রাথমিক পরিকল্পনার তুলনায় এটি ছোট পরিসরের হবে।
রয়টার্স জানায়, ইসরায়েল ঠিক কখন হামলা চালাতে পারে তা নিশ্চিত নয়। বিশেষ করে পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে আলোচনা যখন চলছে, তখন এই ধরনের হামলা মার্কিন-ইসরায়েল সম্পর্ককে চাপের মুখে ফেলতে পারে।
বাইডেন প্রশাসনের সাবেক দুই কর্মকর্তা জানান, গত বছর এসব পরিকল্পনার কিছু অংশ তাদের কাছেও উপস্থাপন করা হয়েছিল, যা সরাসরি সামরিক সহযোগিতা এবং গোয়েন্দা তথ্য ভাগাভাগির ওপর নির্ভরশীল। ইসরায়েল মার্কিন সহায়তা চায় যাতে ইরানের প্রতিশোধমূলক হামলার ক্ষেত্রে তারা আত্মরক্ষা করতে পারে।
নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে একজন শীর্ষ ইসরায়েলি কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানান, এখনো ইরানে হামলার বিষয়ে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
অন্যদিকে, এক ইরানি শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তারা ইসরায়েলের হামলার পরিকল্পনা সম্পর্কে অবগত আছেন এবং এর বিরুদ্ধে কঠোর ও অটল প্রতিক্রিয়ার প্রস্তুতিও রয়েছে। তিনি বলেন, “নির্ভরযোগ্য গোয়েন্দা সূত্র থেকে আমরা জেনেছি—ইসরায়েল একটি বড় ধরনের হামলার পরিকল্পনা করছে। রাজনৈতিকভাবে টিকে থাকার জন্য নেতানিয়াহু এই উত্তেজনা সৃষ্টি করতে চাচ্ছেন।”
আপনার মতামত লিখুন