মিয়ানমারের সংঘাত নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫, ৬:৩৩ অপরাহ্ণ
মিয়ানমারের সংঘাত নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের

মায়ানমারে চলমান সংঘাত, সীমান্তে গোলাগুলির ঘটনা, বেসামরিক নাগরিকদের হতাহত হওয়া এবং নাফ নদের তীরে সাধারণ মানুষের জীবিকা ব্যাহত হওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি সতর্ক করে বলেন, এই অস্থিরতা যদি অব্যাহত থাকে, তাহলে তা বড় ধরনের নিরাপত্তা হুমকিতে রূপ নিতে পারে। পাশাপাশি তিনি রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে একটি সমন্বিত আন্তর্জাতিক উদ্যোগের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

২০ এপ্রিল, রোববার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রম বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি-জেনারেল জ্যাঁ-পিয়েরে লাক্রোয়ার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় তিনি জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সাম্প্রতিক কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনের প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, তার এই সফর রোহিঙ্গাদের মায়ানমারে নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের জন্য নতুন আশা সৃষ্টি করেছে।

সাক্ষাতে ড. ইউনূস জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশি নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর আহ্বান জানান। তিনি বলেন, শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের নারীরা যেন আরও বেশি অংশ নেয়, আমি সেই প্রচেষ্টায় জোর দিচ্ছি। একই সঙ্গে তিনি বৈশ্বিক শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষায় বাংলাদেশের দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।

বর্তমানে জাতিসংঘের ১১টি সক্রিয় মিশনের মধ্যে ১০টিতে বাংলাদেশ থেকে ৫,৬৭৭ জন শান্তিরক্ষী কর্মরত রয়েছেন, যা শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থানকে প্রথম সারিতে রাখে। এ প্রসঙ্গে ‘পিসকিপিং ক্যাপাবিলিটি রেডিনেস সিস্টেমে’ (পিসিআরএস) বাংলাদেশের পাঁচটি ইউনিট র‍্যাপিড ডিপ্লয়মেন্ট পর্যায়ে রাখার প্রতিশ্রুতিও স্মরণ করিয়ে দেন তিনি।

জাতিসংঘ আন্ডার সেক্রেটারি-জেনারেল লাক্রোয়া জানান, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষায় নারীদের শুধু নির্দিষ্ট ভূমিকার মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে, সব পর্যায়ে নিয়োগ দিতে চায়। তিনি আরও বলেন, সদর দপ্তর ও মিশন উভয় পর্যায়ে বাংলাদেশিদের নেতৃত্বে অংশগ্রহণ বাড়ানোর বিষয়ে জাতিসংঘ বাংলাদেশকে সমর্থন দেবে।

প্রধান উপদেষ্টা জানান, জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী যাচাই প্রক্রিয়া (ভেটিং) বাংলাদেশ কঠোরভাবে অনুসরণ করে এবং প্রশিক্ষণ ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে আগ্রহী। সাক্ষাতের শেষ পর্যায়ে জানানো হয়, বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধিদল আগামী ১৩ থেকে ১৪ মে পর্যন্ত জার্মানির বার্লিনে অনুষ্ঠেয় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা বিষয়ক মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে অংশ নেবে।