দেশে অস্থির সময়, রাজনৈতিক সচেতনতার আহ্বান বিএনপি মহাসচিবের

দেশে এক ধরনের অস্থিরতা চলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ‘এই সময়টা আমাদের পরীক্ষার সময়। পত্রপত্রিকা, টেলিভিশন টক শো—সবকিছু দেখেন, কেমন একটা অস্থিরতা চলছে দেশে।’
রোববার (২০ এপ্রিল) রাজধানীর কাকরাইলের ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের আয়োজনে প্রয়াত বিএনপি নেতা আবদুল্লাহ আল নোমান স্মরণে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, “অনেক নির্ধারিত বিষয়কে আমরা আজ অনির্ধারিত করে ফেলেছি। অনিশ্চয়তা চারপাশে।” তিনি মনে করেন, সংস্কার ও নির্বাচনের প্রশ্নগুলো এখন অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে রাজনৈতিকভাবে আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে। এজন্য তিনি সব রাজনৈতিক পক্ষকে ধৈর্যের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানের আহ্বান জানান।
তিনি জানান, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে বিএনপি ইতোমধ্যে নিজেদের প্রস্তাব দিয়েছে। সেই আলোচনার মধ্য দিয়েই একটি গ্রহণযোগ্য সমাধান বেরিয়ে আসবে এবং স্বল্প সময়ের মধ্যেই একটি অবাধ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ তাদের প্রতিনিধি নির্ধারণ করতে পারবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
দলের নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, “সংগ্রাম এখনো শেষ হয়নি। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয়নি। তাই সতর্ক, দৃঢ় ও সচেতন থেকে দলকে আরও সুসংগঠিত করতে হবে।”
তিনি প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলামের হত্যার প্রসঙ্গেও উদ্বেগ প্রকাশ করেন। “জাহিদুলকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। যারা এমন একজন ত্যাগী ছাত্রনেতাকে হত্যা করতে পারে, তারা এই পরিবর্তনের আন্দোলনের অংশ নয়, বরং বিভাজন সৃষ্টির ষড়যন্ত্রে লিপ্ত,”—বলেন তিনি।
শ্রমজীবী মানুষের প্রতি সরকারের অবহেলার কথাও তুলে ধরেন মির্জা ফখরুল। “কৃষক ন্যায্যমূল্য পায় না, শ্রমিকরা পান না তাদের ন্যায্য অধিকার, সন্তানরা পায় না ভালো শিক্ষা—এসব বিষয় নিয়ে কোনো আলোচনা নেই। এমনকি নাটক-টক শোতেও সাধারণ মানুষের কথা উঠে আসে না,”—হতাশা প্রকাশ করে বলেন তিনি।
আবদুল্লাহ আল নোমানের স্মৃতিচারণ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, “এই সন্ধিক্ষণে তার মতো নেতার প্রয়োজন ছিল। তিনি প্রতিকূল সময়েও জনগণকে সংগঠিত করতে পারতেন। আজ একটি পরিবর্তনের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এই সময়টা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। জনগণের মতপ্রবাহকে সঠিক পথে পরিচালিত করা এখন সবচেয়ে জরুরি দায়িত্ব।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন। আরও উপস্থিত ছিলেন নজরুল ইসলাম খান, আহমদ আজম খান, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, এবং প্রয়াত নেতার ছেলে সাঈদ আল নোমানসহ অনেকে।
আপনার মতামত লিখুন