দেশের রাজনীতিতে নির্বাচনী প্রস্তুতি ও নতুন দলের প্রবাহ

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: রবিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৫, ১:২৫ অপরাহ্ণ
দেশের রাজনীতিতে নির্বাচনী প্রস্তুতি ও নতুন দলের প্রবাহ

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, আগামী ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে দেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। একই সময়ের মধ্যে যাবতীয় সংস্কার কার্যক্রমও সম্পন্ন করা হবে বলে তিনি জানান। শনিবার রোমের একটি হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। প্রেস সচিব বলেন, প্রধান উপদেষ্টা বারবার স্পষ্টভাবে বলেছেন নির্বাচন নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই হবে। ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণেও এ বিষয়ে স্পষ্ট করে উল্লেখ করেছেন। তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর দাবির বিষয় সরকার গুরুত্ব দিয়ে শুনছে, তবে সংস্কার কাজ ও জুলাই চার্টার সম্পন্ন হওয়ার পরই নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হবে। অপ্রয়োজনীয় কারণে কোনো ধরনের বিলম্ব করা হবে না। অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ পাঁচ বছর দীর্ঘায়িত করার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, জনগণ চাইতেই পারে, তবে সরকার নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই নির্বাচন আয়োজনের ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এ সময় তিনি প্রধান উপদেষ্টার রোম সফর এবং সেখানে পোপ ফ্রান্সিসের শেষকৃত্যে অংশগ্রহণের প্রসঙ্গও তুলে ধরেন। সফরকালে ড. ইউনূস বিভিন্ন দেশের বিশ্বনেতাদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেছেন বলে জানান তিনি। এ সময় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও দূতাবাসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন এবং বাংলাদেশের গার্মেন্টস ও অন্যান্য পণ্যের ইতালিতে বাজার সম্প্রসারণের বিষয়েও আলোকপাত করা হয়।

এদিকে দেশের রাজনীতিতে চলছে নতুন দল গঠনের প্রবাহ। আওয়ামী লীগের পতনের পর গত আট মাসে ২৪টি নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। যদিও প্রতি নির্বাচনের আগে এমন প্রবণতা দেখা যায়, তবে এবার দল গঠনের হার তুলনামূলক বেশি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পুরনো রাজনৈতিক ব্যক্তিরা নতুন দলের ব্যানারে সামনে আসছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় নতুন দলের আবির্ভাব ইতিবাচক হলেও টিকে থাকা তাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হবে। তাদের মতে, যদি দল গঠনের পেছনে সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্য ও সংগঠনের শক্ত ভিত না থাকে, তাহলে এগুলো দ্রুতই হারিয়ে যাবে। সাম্প্রতিক সময়ে বিএনএম, জনতা পার্টি বাংলাদেশ, বাংলাদেশ নতুনধারা জনতার পার্টি সহ বিভিন্ন নতুন দলের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। তবে এদের মধ্যে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) তুলনামূলকভাবে কিছুটা আলোচনায় এসেছে এবং সংগঠনও গুছিয়ে ফেলেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজী মো. মাহবুবুর রহমান বলেছেন, সংকটকালীন সময়ে এবং রাজনৈতিক মুক্ত পরিবেশে দল গঠনের প্রবণতা বেড়ে যায়। পাশাপাশি নির্বাচনকে প্রভাবিত করতেও ছোট দলগুলোর ভূমিকা থাকে। তবে জনগণের গ্রহণযোগ্যতাই নির্ধারণ করবে নতুন দলগুলোর ভবিষ্যৎ। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আগামী নির্বাচন নতুন দলগুলোর জন্য একটি বড় পরীক্ষা হতে যাচ্ছে।