গাজা দখলে নতুন অভিযানের ঘোষণা: ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর হুঁশিয়ারি

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ঘোষণা দিয়েছেন যে, দেশটি ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের বিরুদ্ধে একটি “তীব্র” সামরিক অভিযান শুরু করেছে এবং গাজা উপত্যকাকে সম্পূর্ণ দখলে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সোমবার (৫ মে) নিরাপত্তা মন্ত্রিসভায় গাজার পুরো অংশ দখল এবং সেখানে মানবিক সাহায্য নিজেদের দখলে নেওয়ার একটি পরিকল্পনা অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
নেতানিয়াহু এক ভিডিও বার্তায় হুশিয়ারি দিয়ে বলেন, এই অভিযান পূর্ববর্তী অভিযানগুলির থেকে আলাদা হবে এবং এর ফলে বহু ফিলিস্তিনিকে স্থানান্তরিত হতে হবে। নতুন পরিকল্পনাটি ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন করা হবে এবং কয়েক মাস সময় লাগতে পারে। গাজার পুরো ভূখণ্ড দখল করে বেসামরিক জনগণকে দক্ষিণে সরিয়ে নেওয়া হবে এবং মানবিক সাহায্য হামাসের হাতে না পৌঁছানোর জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ইতোমধ্যে গাজার এক-তৃতীয়াংশ এলাকা দখল করেছে এবং সেখানে ওয়াচ-টাওয়ার ও নজরদারি পোস্ট স্থাপন করেছে, এই অঞ্চলটিকে “নিরাপত্তা অঞ্চল” হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
ইসরায়েলের কট্টরপন্থী রাজনীতিবিদরা গাজা পুরোপুরি দখল করার পরিকল্পনাকে সমর্থন জানিয়ে প্রশংসা করেছেন। অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ জানিয়েছেন, “আমরা অবশেষে গাজা জয় করতে যাচ্ছি।”
তবে হামাস নেতা মাহমুদ মারদাউই ইসরায়েলের এই পরিকল্পনাকে “চাপ ও হুমকি” হিসেবে অভিহিত করেছেন এবং বলেছেন, একটি দীর্ঘস্থায়ী সমাধান ছাড়া কোনো শান্তি সম্ভব নয়, যার মধ্যে যুদ্ধবিরতি, গাজা থেকে ইসরায়েলি প্রত্যাহার, পুনর্গঠন ও বন্দি বিনিময় অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
ইসরায়েলের অভ্যন্তরেও যুদ্ধবিরতির পক্ষে জনমত বাড়ছে। জরিপ অনুযায়ী, জনগণের একটি বড় অংশ গাজায় আটক থাকা ৫৯ জন জিম্মির মুক্তির জন্য চুক্তির পক্ষে। সংসদের বাইরে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া রুবি চেন বলেছেন, “আমাদের সমস্ত পরিবার ক্লান্ত। আমরা এই নতুন অভিযানে ভীত, কারণ এর ফল কী হবে তা কেউ জানে না।”
এই পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক চাপ এবং দেশের জনসমর্থনের হ্রাসের মধ্যে ইসরায়েলের নতুন সিদ্ধান্তকে একটি নতুন ও তীব্র লড়াইয়ের সম্ভাবনা হিসেবে তুলে ধরছে।
আপনার মতামত লিখুন