ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনায় নাটকীয় মোড়, মোদীকে ফোন করে যুদ্ধবিরতির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার চলমান উত্তেজনা দ্রুত ‘নাটকীয় মোড়’ নিতে পারে—এমন আশঙ্কাজনক গোয়েন্দা তথ্য পাওয়ার পরপরই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ফোন করেন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্স। সিএনএন জানায়, শুক্রবার সকালে মার্কিন গোয়েন্দারা একটি গোপনীয় রিপোর্টে জানান, এই সংঘাত যেকোনো সময় ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে ভান্স তা অবিলম্বে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অবহিত করেন এবং পরে মোদীর সঙ্গে সরাসরি ফোনালাপে যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার পরামর্শ দেন।
ভান্সের কূটনৈতিক হস্তক্ষেপের পর শুক্রবার বিকেলেই ভারত ও পাকিস্তান যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার ঘোষণা দেয়। ভারতীয় পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিস্রী জানান, দুই দেশের সামরিক কর্মকর্তাদের সরাসরি আলোচনার মাধ্যমেই এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিকেল ৫টা থেকে স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে সব ধরনের সামরিক অভিযান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হয়।
মার্কিন প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়, শুধু ভাইস প্রেসিডেন্ট ভান্স নন, বিদেশসচিব মার্কো রুবিয়ো এবং হোয়াইট হাউস চিফ অব স্টাফ সুসি উইলিসও গোয়েন্দা রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর থেকেই ঘটনাপ্রবাহের ওপর ঘনিষ্ঠভাবে নজর রাখছিলেন। তৎক্ষণাৎ আলোচনায় বসে তারা সক্রিয় মধ্যস্থতার সিদ্ধান্ত নেন, যার অংশ হিসেবে মোদীকে ফোন করেন ভান্স। তিনি মোদীকে সতর্ক করে বলেন, পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে এবং সপ্তাহান্তেই সংঘাত আরও তীব্র হতে পারে।
উল্লেখ্য, গত মাসে ভারত সফরে এসে মোদীর সঙ্গে সরাসরি বৈঠক করেছিলেন ভাইস প্রেসিডেন্ট ভান্স, ফলে ট্রাম্প প্রশাসন তাঁর ওপর বিশেষ আস্থা রেখেছিল বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউসের একাংশ।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এ ঘটনার পর এক্স (সাবেক টুইটার)–এ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানান। তবে ভারতের পক্ষ থেকে দেওয়া বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার কোনো উল্লেখ করা হয়নি। ভারতীয় পররাষ্ট্রসচিব মিস্রী বরং জোর দিয়ে বলেন, দুই দেশ সরাসরি আলোচনার মাধ্যমেই যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছেছে।
এই ঘটনাপ্রবাহ আবারও প্রমাণ করে, আন্তর্জাতিক কূটনীতি ও গোয়েন্দা পর্যবেক্ষণ এখনও উপমহাদেশে শান্তি রক্ষায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন