ভারত-পাকিস্তান সংঘাত: যুদ্ধবিরতি হলেও স্থায়ী উদ্বেগ

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: রবিবার, ১১ মে, ২০২৫, ২:৫০ অপরাহ্ণ
ভারত-পাকিস্তান সংঘাত: যুদ্ধবিরতি হলেও স্থায়ী উদ্বেগ

টানা কয়েক দিন ধরে চলা ভারত-পাকিস্তানের হামলা-পাল্টা হামলা শেষে দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশ অবশেষে নাটকীয়ভাবে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় দীর্ঘ ৪৮ ঘণ্টার চেষ্টায় এই যুদ্ধবিরতির ঘোষণা আসে। পরে উভয় দেশ তাৎক্ষণিকভাবে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেয়। তবে ঘোষণা সত্ত্বেও দুই প্রতিবেশী দেশ একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করতে থাকে, যা সংঘাত নিয়ে উদ্বেগ প্রশমিত করেনি।

যুদ্ধবিরতির আগের ৮৭ ঘণ্টা ২৫ মিনিটজুড়ে চলা এই সংঘাত শুধু সীমান্তেই নয়, কাঁপিয়ে দিয়েছে অর্থনীতি, বিনিয়োগ ও আকাশপথ। প্রতি ঘণ্টায় এক বিলিয়ন ডলারেরও বেশি ক্ষতির মাধ্যমে স্পষ্ট হয়েছে আধুনিক যুদ্ধের ভয়াবহতা। বিভিন্ন গণমাধ্যমের তথ্যে দেখা যায়, পাকিস্তানের তুলনায় ভারতের ক্ষয়ক্ষতি প্রায় ২২ গুণ বেশি হয়েছে। ভারতের স্টক মার্কেট, আকাশপথ ও বিনিয়োগ খাতে বড় ধরনের ধস নামে। নিফটি ৫০ এবং বিএসই সেনসেক্স মিলিয়ে ভারত হারিয়েছে প্রায় ৮২ বিলিয়ন ডলারের বাজার মূলধন। উত্তর ভারতের আকাশপথ বন্ধ থাকায় প্রতিদিন ৮ মিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হয়েছে বাণিজ্যিক বিমানে। আইপিএল স্থগিত হওয়ায় ৫০ মিলিয়ন ডলার লোকসান হয়েছে টিভি স্বত্ব, টিকিট বিক্রি ও বিজ্ঞাপন থেকে। সামরিক অভিযানে খরচ হয়েছে ১০০ মিলিয়ন ডলার এবং রাফায়েল যুদ্ধবিমানের ক্ষতি হয়েছে ৪০০ মিলিয়ন ডলারের। পণ্য পরিবহন ও সরবরাহ ব্যবস্থা ব্যাহত হওয়ায় ক্ষতি হয়েছে আরও ২ বিলিয়ন ডলার। বিনিয়োগকারীদের আস্থা হারানো এবং সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ হ্রাসের প্রভাব মিলিয়ে ভারতের মোট ক্ষতি দাঁড়িয়েছে আনুমানিক ৮৩ বিলিয়ন ডলার।

অন্যদিকে, একই সময়ে পাকিস্তানের কেএসই-১০০ সূচক ৪.১ শতাংশ পতনের ফলে দেশটি প্রায় ২.৫ বিলিয়ন ডলার হারিয়েছে। পাকিস্তান সুপার লিগ স্থগিত হওয়ার কারণে সম্প্রচার ও সম্পর্কিত খাতগুলোতে ১০ মিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হয়। বিমান চলাচল বন্ধ থাকায় লোকসান হয় ২০ মিলিয়ন ডলার। সামরিক অভিযানে প্রতিদিন ২৫ মিলিয়ন ডলার খরচ ছাড়াও ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৩০০ মিলিয়ন ডলার। বিনিয়োগে আস্থাহানির অর্থনৈতিক প্রভাব নির্দিষ্ট করে পরিমাপ করা না গেলেও পাকিস্তানের মোট ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪ বিলিয়ন ডলার।

যুদ্ধবিরতি ঘোষণা সত্ত্বেও সীমান্তে উত্তেজনা ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা চলমান রয়েছে। এই সংঘাত দুই দেশের জন্যই একটি কঠিন বার্তা হয়ে রইল—যুদ্ধের কৌশলগত প্রভাব ছাড়িয়ে তার ভয়াবহ মূল্য দিতে হয় অর্থনীতি, সমাজ ও আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতার খাতে।