গণঅধিকার পরিষদের আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছে গণঅধিকার পরিষদ। একই সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির নিবন্ধন বাতিলের আহ্বান জানিয়েছে দলটি। আগামীকাল সোমবার নির্বাচন কমিশনে লিখিত অভিযোগ দেবে গণঅধিকার পরিষদ।
রোববার (১১ মে) দুপুর ১২টার দিকে গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। লিখিত বক্তব্যে গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন বলেন, গতকাল উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অধীনে সাইবার স্পেসসহ আওয়ামী লীগের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও তার নেতাদের বিচারকার্য সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, জুলাই আন্দোলনের নেতাকর্মীদের নিরাপত্তা এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বাদী ও সাক্ষীদের সুরক্ষার জন্য এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। সরকারের এই সিদ্ধান্তকে গণঅধিকার পরিষদ সাধুবাদ জানায় এবং আন্দোলনকারী বিপ্লবী ছাত্র-জনতাকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানায়। তবে তিনি বলেন, “চূড়ান্ত নিষিদ্ধ হওয়ার আগ পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে।”
রাশেদ খাঁন আরও জানান, গণঅধিকার পরিষদ শুরু থেকেই গণহত্যার বিচার ও ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের জন্য কাজ করে আসছে। এ লক্ষ্যে গত ৫ ফেব্রুয়ারি জেলায় জেলায় ডিসির মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় বিক্ষোভ সমাবেশ, ২২ মার্চে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি, এবং সর্বশেষ ৯ মে শুক্রবার দুপুর ২টায় গণমিছিল ও পল্টন মোড় অবরোধ করে কর্মসূচি পালন করেছে গণঅধিকার পরিষদ।
তিনি বলেন, “ভুলে গেলে চলবে না, গত ৮ মে রাতে সরকারের গ্রিন সিগন্যাল পেয়ে ডামি রাষ্ট্রপতি, হত্যা মামলার আসামি আবদুল হামিদ দেশ ছেড়েছেন। এ ঘটনায় রাঘববোয়ালদের বাঁচাতে ৪ পুলিশ কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। অনতিবিলম্বে তাদের বদলি আদেশ প্রত্যাহার করতে হবে।”
নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা বা ধোঁয়াশা তৈরি হওয়া সম্পর্কে তিনি বলেন, “সরকারের দায়িত্ব দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা এবং রাজনৈতিক দল ও গণঅভ্যুত্থানের অংশীজনদের সঙ্গে দূরত্ব কমানো।” তিনি সতর্ক করেন যে, “অন্যথায় এই ধোঁয়াশা ও অনিশ্চয়তা দেশের জন্য মঙ্গল বয়ে আনবে না।”
গণঅধিকার পরিষদের নেতা আরও বলেন, “আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ হয়ে গেছে। গণহত্যার বিচারপূর্বক তাদের নিবন্ধনও স্থগিত বা বাতিল করতে হবে। দ্রুত বিচার শেষ করে আওয়ামী লীগকে ফ্যাসিবাদী দল হিসেবে চূড়ান্তভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে। তাহলেই এই বিপ্লব সম্পূর্ণ হবে।”
সংবাদ সম্মেলনে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরসহ দলের অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন, তাদের মধ্যে ছিলেন সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুন, উচ্চতর পরিষদ সদস্য আবু হানিফ, শাকিল উজ্জামান, মাহফুজুর রহমান খান, হাবিবুর রহমান রিজু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জিলু খান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি নাজিম উদ্দীন, আরিফুর রহমান প্রমুখ।
আপনার মতামত লিখুন