মাত্র তিন বছরেই বেহাল মাগুরার ফোর লেন সড়ক, জনদুর্ভোগ চরমে

মাত্র তিন বছর আগে ১১২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত মাগুরার ফোর লেন মহাসড়কটি যাতায়াত সহজ করা এবং অর্থনৈতিক গতিশীলতা আনার প্রত্যাশায় উদ্বোধন করা হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে এই সড়ক এখন সাধারণ মানুষের জন্য যেন দুর্ভোগের আরেক নাম। সড়কের বিভিন্ন অংশে বড় বড় গর্ত, ভাঙাচোরা পিচ এবং ধুলোর আস্তরণ প্রতিদিনই যাত্রী ও চালকদের ভোগান্তির কারণ হয়ে উঠেছে।
বিশেষ করে ভায়না মোড়, পারনান্দয়ালী, স্টেডিয়াম গেট ও পুলিশ লাইন গেট সংলগ্ন অংশগুলো এতটাই ক্ষতিগ্রস্ত যে, সেগুলো কার্যত চলাচলের অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে। এতে অটোরিকশা উল্টে যাওয়ার মতো দুর্ঘটনা, গাড়ির টায়ার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া এবং যাত্রীদের নিরাপত্তার ঝুঁকি অনেক বেড়ে গেছে। এক অটোচালক সাগর বলেন, “এই রাস্তা দিয়ে যাত্রী তোলা এখন জীবনের ঝুঁকি। প্রতিদিনই গাড়িতে কিছু না কিছু ক্ষতি হয়।”
সাধারণ মানুষ এবং চালকেরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, মাত্র কয়েক বছরের মধ্যে সড়কের এমন অবস্থা নির্মাণকাজের মান নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তোলে। তারা দ্রুত মেরামত এবং একটি স্থায়ী সমাধানের দাবি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) মাগুরা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাসেল জানান, “আমরা সড়কের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে অবগত। জরুরি ভিত্তিতে সংস্কারের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। একটি নতুন প্রকল্পের আওতায় ওভারল কাজের জন্য টেন্ডার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে এবং শিগগিরই কার্যাদেশ দেওয়া হবে। আমরা চেষ্টা করছি দ্রুততম সময়ের মধ্যে কাজ শুরু করে জনদুর্ভোগ লাঘব করতে।”
স্থানীয় এক বাসচালক জানান, “প্রতিদিনই গাড়ির চাকা গর্তে পড়ে। এতে যাত্রীদের নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়ে এবং গাড়ির ক্ষতি হয়।” অন্যদিকে এক ট্রাকচালক বলেন, “রাতে গর্ত দেখা যায় না, ফলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা আরও বেড়ে যায়। দ্রুত মেরামতের দাবি জানাচ্ছি।”
ফোর লেন সড়কের এমন বেহাল অবস্থা মাগুরার সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের স্থায়ী রূপ নিয়েছে। সড়ক বিভাগের আশ্বাস অনুযায়ী দ্রুত সংস্কার কাজ শুরু হলে হয়তো কিছুটা স্বস্তি মিলবে—এই আশাতেই পথ চেয়ে আছেন সবাই। তবে এই ঘটনা আবারও মনে করিয়ে দেয়, সরকারি প্রকল্পে বিশাল ব্যয়ের পাশাপাশি সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ ও মান নিয়ন্ত্রণ না থাকলে জনগণের ভোগান্তি শেষ হবে না। মাগুরার ফোর লেন সড়ক যেন সেই বাস্তবতারই এক নির্মম উদাহরণ।
আপনার মতামত লিখুন