আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত করল নির্বাচন কমিশন
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন (ইসি) দেশের অন্যতম প্রাচীন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত করেছে। সোমবার (১২ মে) রাত সোয়া ৯টার দিকে ইসি সচিব আখতার আহমেদ সাংবাদিকদের এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।
এর আগে বিকেল ৫টা ৩০ মিনিটে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে ইসির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রায় চার ঘণ্টার দীর্ঘ বৈঠক শেষে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার ও আব্দুর রহমানেল মাছউদ, এছাড়া আইন শাখার যুগ্ম সচিব ফারুক আহমেদসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
সচিব আখতার আহমেদ বলেন, “স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনের ধারাবাহিকতায় নির্বাচন কমিশন আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সে অনুযায়ী গেজেট নোটিফিকেশন জারি করা হয়েছে, যা বিজি প্রেস থেকে সংগ্রহ করা যাবে।”
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও), ১৯৭২-এর ৯০ (জ) অনুচ্ছেদ ১(খ) অনুযায়ী, কোনো দল নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলে তার নিবন্ধন বাতিলের বিধান রয়েছে। তবে যেহেতু আওয়ামী লীগকে দল হিসেবে নিষিদ্ধ না করে কেবল তাদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে, তাই আপাতত নিবন্ধন ‘স্থগিত’ করা হয়েছে।
নিবন্ধন স্থগিত হওয়ার ফলে আওয়ামী লীগ এখন থেকে দেশের কোনো জাতীয় বা স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। ২০০৮ সালে চালু হওয়া নিবন্ধন ব্যবস্থায় আওয়ামী লীগ ছিল নিবন্ধিত ৬ নম্বর দল, যার প্রতীক ছিল ‘নৌকা’। তাদের নিবন্ধন স্থগিতের মাধ্যমে এখন নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৯টি।
এর আগে, সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে এক প্রজ্ঞাপনে আওয়ামী লীগ ও তার সকল অঙ্গ, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের যাবতীয় রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়। বিচারাধীন মানবতাবিরোধী অপরাধ, সহিংসতা এবং জননিরাপত্তা বিঘ্নের আশঙ্কার প্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানানো হয় সরকার পক্ষ থেকে।
এই ঘটনাকে দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা।


আপনার মতামত লিখুন