ড. মুহাম্মদ ইউনূসের চট্টগ্রাম সফর ও বিভিন্ন কর্মসূচি

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বুধবার সকালে চট্টগ্রামে পৌঁছে একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে যোগদান করেন।
চট্টগ্রামের মাটিতে পা রাখার সঙ্গে সঙ্গে সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে দেখতে শহরের মানুষ উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি করেন। কঠোর নিরাপত্তার মধ্যেও মানুষ তাকে একনজর দেখার জন্য ব্যাপক ভিড় করেন। যদিও তিনি চট্টগ্রামের সন্মানিত সন্তান, এবার প্রধান উপদেষ্টার পদ পেয়েই তার প্রতি মানুষের আগ্রহ আরও বেড়েছে।
ড. ইউনূস চট্টগ্রাম বন্দরে এসে বন্দরের ভবিষ্যত পরিকল্পনা ও উন্নয়নের বিষয়ে তার ভাবনা ব্যক্ত করেন। পরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে কালুরঘাট সেতুর ভিত্তিপ্রস্তরের স্মারক ফলক উদ্বোধন করেন। নগরের দক্ষিণ কাট্টলী এলাকায় চট্টগ্রাম হার্ট ফাউন্ডেশনকে হাসপাতাল নির্মাণের জন্য ২৩ একর জমি বরাদ্দ দেন।
জলাবদ্ধতা নিরসন এবং অক্সিজেন-হাটহাজারী মহাসড়কের উন্নয়নের জন্য অনুষ্ঠিত সভায় হাটহাজারী ও কর্ণফুলী উপজেলায় দুটি পৃথক হাসপাতাল নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়। তিনি জলাবদ্ধতা মোকাবেলায় এই বছরে লক্ষণীয় অগ্রগতির নির্দেশনা দেন।
এরপর ড. ইউনূস চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দিয়ে সাবেক শিক্ষক ও প্রধান অতিথি হিসেবে সমাবর্তনে উপস্থিত হন। গাউন পরিহিত শিক্ষার্থীদের সামনে উপস্থিত হয়ে তিনি উল্লাসে মেতেন। সমাবর্তন অনুষ্ঠানে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা তার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও উৎসাহ প্রদর্শন করেন।
সমাবর্তনের পরে তিনি নিজ পৈত্রিক ভিটায় ফিরে যান, যেখানে রাস্তার দুই পাশে হাজার হাজার মানুষ তাকে অভ্যর্থনা জানান। নিকট আত্মীয়স্বজনের কবর জিয়ারত ও এলাকাবাসীর সঙ্গে মতবিনিময় করেন। চট্টগ্রামের ভাষায় প্রাচীন স্মৃতিচারণ করে উপস্থিত সবাইকে আনন্দ দেন।
ড. ইউনূস বলেন,
“নজুমিয়াহাট, জুনু মিয়ার জালাবাড়ি, ফারুক মিয়ার মোটরগাড়ি… চিন্তা করেন কখনের কথা, আমার দাদার মোটরগাড়ি এসেছিল। তখন দেশে মোটরগাড়ি কেউ চিনতো না। পরবর্তীতে শুনলাম নজুমিয়া হাট শহর হয়ে গেছে, শহর বিলাত হয়ে গেছে। আরও হবে। খুব ভালো লাগলো সবার সাথে দেখা হলো। আজকে আসলাম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে। বাড়ির পাশে আসলাম। বললাম আমাকে একটু বাড়িতে নিয়ে যেতে পারেন, কারণ নড়াচড়া করা বড় মুশকিল। আসলাম, সবার সাথে দেখা হলো। আশা করি ভবিষ্যতে আরও আসবো, আসা-যাওয়া হবে। আমার জন্য দোয়া করবেন।”
চট্টগ্রাম সফর সুষ্ঠু ও সফলভাবে সম্পন্ন করে ড. মুহাম্মদ ইউনূস এই সফরকে স্মরণীয় করেন।
আপনার মতামত লিখুন