হালদা নদীতে মা মাছের মৃত্যু, উদ্বেগ প্রকাশ গবেষকদের

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৫ মে, ২০২৫, ৫:৩১ অপরাহ্ণ
হালদা নদীতে মা মাছের মৃত্যু, উদ্বেগ প্রকাশ গবেষকদের

এশিয়ার অন্যতম প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে বর্তমানে কার্পজাতীয় মা মাছের প্রজনন মৌসুম চলছে। এই সময়ের মধ্যে ১২ দিনের ব্যবধানে নদী থেকে দুটি মৃত মা মাছ উদ্ধার করা হয়েছে, যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

সবশেষ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে রাউজান উপজেলার পশ্চিম গুজরা ইউনিয়নের আজিমের ঘাট এলাকায় জোয়ারের স্রোতে ভেসে আসা একটি মৃত মৃগেল মা মাছ দেখতে পান স্থানীয়রা। পরে হালদা নদীর ডিম সংগ্রহকারী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক রোসাঙ্গীর আলম, ডিম সংগ্রাহক আনোয়ার হোসেন ও মোহাম্মদ বখতেয়ার মাছটি উদ্ধার করে তীরে নিয়ে আসেন। মাছটির ওজন ছিল ৫ কেজি ১০০ গ্রাম এবং দৈর্ঘ্য ২ ফুট ৬ ইঞ্চি। মাথার নিচে থেঁতলানোর চিহ্ন ছিল স্পষ্ট। খবর পেয়ে হাটহাজারী উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম ঘটনাস্থলে এসে প্রাথমিক তদন্ত শেষে মাছটি স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবীদের সহায়তায় মাটিচাপা দিয়ে দাফনের ব্যবস্থা নেন।

এর আগে ৪ মে রবিবার বিকেল ৩টার দিকে হাটহাজারী উপজেলার মাদার্শার মুন্সিমাঝির ঘাট এলাকা থেকে ৫ কেজি ওজনের একটি মৃত কাতলা মা মাছ উদ্ধার করা হয়। সেখানেও মাথায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে হালদা গবেষক ও চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজের জীববিজ্ঞান বিভাগের প্রধান সহকারী অধ্যাপক ড. মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, “বর্তমানে হালদা নদীতে কার্পজাতীয় মা মাছের প্রজনন মৌসুম চলছে। ইতোমধ্যে তিনটি জো অতিক্রান্ত হলেও বৃষ্টিপাত না হওয়ায় মা মাছ এখনো ডিম ছাড়েনি। এই সময়কালে মা মাছের মৃত্যু অত্যন্ত উদ্বেগজনক।”

তিনি আরও বলেন, “মা মাছ যেন নিরাপদে ডিম ছাড়তে পারে, সেজন্য হালদা ও এর শাখা খালগুলোতে নিয়মিত প্রশাসনিক অভিযান চালানো এবং স্থানীয় পর্যায়ে নজরদারি বাড়ানো জরুরি। ইঞ্জিনচালিত নৌযান নিষিদ্ধ, অসাধু মাছ শিকারিদের দমন এবং দূষণ রোধের মাধ্যমে হালদার জলজ বাস্তুতন্ত্র রক্ষা করতে হবে। পরিবেশ অনুকূলে থাকলে, অর্থাৎ বজ্রপাতসহ পর্যাপ্ত বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢল নামলে চলতি মাসের অমাবস্যার জো (২৫–২৯ মে) তে মা মাছ ডিম ছাড়বে ইনশাআল্লাহ।”