ভারত পাকিস্তানি পণ্যের তৃতীয় দেশের মাধ্যমে প্রবেশ বন্ধে কঠোর নজরদারি

কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর থেকে পাকিস্তান থেকে সরাসরি ও পরোক্ষভাবে ভারতীয় বাজারে পণ্য আমদানি কঠোর নিয়ন্ত্রণাধীন রয়েছে। বিশেষ করে পাকিস্তানি পণ্য যেন তৃতীয় দেশের মাধ্যমে ভারতের বাজারে প্রবেশ করতে না পারে, সেজন্য সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই), ইরান ও উপসাগরীয় দেশগুলো এবং ট্রানশিপমেন্ট হাব থেকে আমদানিকৃত পণ্যের ওপর ভারতের নজরদারি ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ভারত সরকার এসব পণ্যের লেবেল ও উৎপত্তি দেশ যাচাই করে নিশ্চিত হচ্ছে, যাতে কোনো পণ্যের অংশ পাকিস্তান থেকে এসেছে কি না। ইউএই থেকে পাকিস্তানি খেজুরকে নিজের লেবেল দিয়ে ভারতীয় বাজারে ঢুকানোর অভিযোগ বিশেষ উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে এবং দিল্লি এটিকে সেপা চুক্তির অপব্যবহার হিসেবে দেখছে।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের এপ্রিল থেকে ফেব্রুয়ারির মধ্যে ভারত ২৭০.৪ মিলিয়ন ডলারের খেজুর আমদানি করেছে, যার প্রায় অর্ধেক এসেছে ইউএই থেকে। একই সময়ে পাকিস্তান থেকে ইউএইতে রপ্তানি বৃদ্ধি পেয়েছে ২৮ শতাংশ, যার পরিমাণ প্রায় ১২০ কোটি ডলার, যা ভারতকে সন্দেহে ফেলেছে যে পাকিস্তানি খেজুর ইউএই হয়ে ভারতে প্রবেশ করছে কি না।
ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয় ২ মে একটি বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, পাকিস্তানে উৎপাদিত বা রপ্তানিকৃত পণ্য সরাসরি বা অন্য দেশের মাধ্যমে ভারতের বাজারে প্রবেশ করতে পারবে না, যদিও জাতীয় স্বার্থ বা সরকারি অনুমোদন সাপেক্ষে কিছু ব্যতিক্রম থাকতে পারে। ভারতের কর্মকর্তারা বলেন, ‘রুলস অব অরিজিন’ নীতিমালা অনুযায়ী এখন প্রতিটি পণ্যের উৎপত্তি খুঁটিয়ে দেখা হচ্ছে, এমনকি ট্রানজিট অবস্থায় থাকা পণ্যও নজরদারির আওতায় রয়েছে। তবে সরকার এখনও স্পষ্ট করেনি যে ট্রানজিট পণ্য নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে কিনা।
২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর থেকে ভারত পাকিস্তানি পণ্যের ওপর ২০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করায় দুই দেশের বাণিজ্য কমে এসেছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে ভারত পাকিস্তান থেকে মাত্র ২.৮৮ মিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করেছে। উল্লেখ্য, ভারত ১৯৯৬ সালে পাকিস্তানকে ‘সবচেয়ে অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত দেশ’ (এমএফএন) মর্যাদা দেয়ার পরও পাকিস্তান কখনো ভারতকে এই মর্যাদা দেয়নি।
এই পদক্ষেপগুলো ভারত-পাকিস্তানের চলমান রাজনৈতিক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে বাণিজ্যিক সম্পর্ককে কঠোর নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করছে।
আপনার মতামত লিখুন