জয়শঙ্করের ‘অপারেশন সিঁদুর’ সংক্রান্ত মন্তব্যে ভারতজুড়ে রাজনৈতিক তোলপাড়

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: রবিবার, ১৮ মে, ২০২৫, ৪:৪০ অপরাহ্ণ
জয়শঙ্করের ‘অপারেশন সিঁদুর’ সংক্রান্ত মন্তব্যে ভারতজুড়ে রাজনৈতিক তোলপাড়

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্করের এক সাম্প্রতিক মন্তব্য ঘিরে দেশটির রাজনীতিতে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, ‘অপারেশন সিঁদুর’ পরিচালনার আগে পাকিস্তানকে অবহিত করা হয়েছিল। তার এই বক্তব্যকে বিরোধী দলগুলো ‘বিপজ্জনক স্বীকারোক্তি’ হিসেবে উল্লেখ করে মোদি সরকারের কঠোর সমালোচনা করছে।

কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেন, “হামলার আগে পাকিস্তানকে সবকিছু জানিয়ে দেওয়া ভারতীয় সেনাদের জীবন ও দেশের নিরাপত্তাকে ঝুঁকির মুখে ফেলেছে। এটা অপরাধ।” এক্স (সাবেক টুইটার)-এ দেওয়া পোস্টে তিনি লিখেছেন, “পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রকাশ্যে স্বীকার করেছেন ভারত সরকার পাকিস্তানকে আগে অবহিত করেছে। কে এই সিদ্ধান্ত অনুমোদন দিয়েছিল? এর কারণে আমাদের বিমানবাহিনী কতটি বিমান হারিয়েছে?”

রাহুল গান্ধী জয়শঙ্করের একটি ভিডিও-ও প্রকাশ করেছেন, যেখানে জয়শঙ্কর বলেন, “অপারেশনের শুরুতে আমরা পাকিস্তানকে একটি বার্তা পাঠাই—আমরা সন্ত্রাসবাদী অবকাঠামোতে হামলা করব, পাক সেনাদের ওপর নয়। এতে তাদের দূরে থাকার সুযোগ ছিল, কিন্তু তারা আমাদের ‘ভালো পরামর্শ’ গ্রহণ করেনি।”

তবে এই বক্তব্যকে ঘিরে বিতর্ক ছড়িয়ে পড়লে ভারতের সরকারি প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো (PIB) দাবি করে, জয়শঙ্করের বক্তব্য বিকৃতভাবে প্রচার করা হয়েছে এবং তিনি এমন কিছু বলেননি যা থেকে বোঝায় পাকিস্তানকে হামলার আগে জানানো হয়েছিল। যদিও ভিডিওতে তার বক্তব্য স্পষ্টভাবে শোনা যাচ্ছে এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকেও এখন পর্যন্ত তা প্রত্যাখ্যান করা হয়নি।

এ নিয়ে সমালোচনায় অংশ নিয়েছে আম আদমি পার্টিও। দলটির মুখপাত্র ও রাজ্যসভার এমপি সঞ্জয় সিং বলেন, “যখন পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিজেই বলেন, পাকিস্তানকে আগেই সতর্ক করা হয়েছে, তখন তা দেশদ্রোহিতার শামিল। এটি ভারত এবং আমাদের সেনাবাহিনীর সঙ্গে বেঈমানি।”

তিনি আরও বলেন, “এখন প্রধানমন্ত্রী মোদিকে বলতে হবে—ডোনাল্ড ট্রাম্পের দাবি কতটা সত্য এবং জয়শঙ্করের বক্তব্য কতটা নির্ভরযোগ্য? পাকিস্তানকে আগে জানানো কি উচ্চপর্যায়ের সিদ্ধান্ত ছিল? ভারতের জনগণের এটা জানার অধিকার আছে।” তিনি সতর্ক করে দেন, সরকার যদি এই বিষয়ে সন্তোষজনক ব্যাখ্যা না দেয়, তবে বিরোধী দলগুলো বিষয়টি জনগণের সামনে উপস্থাপন করবে এবং এর সঙ্গে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনার দাবি তুলবে।

এই পরিস্থিতিতে জয়শঙ্করের বক্তব্য ও এর প্রতিক্রিয়া নিয়ে ভারতের রাজনীতিতে নতুন করে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। নিরাপত্তা ও কূটনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টির গুরুত্ব বাড়ছে বলেও বিশ্লেষকরা মনে করছেন।