যশোরের অভয়নগর উপজেলায় মতুয়া সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ: মামলা দায়ের ও গ্রেপ্তার

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৯ মে, ২০২৫, ৩:১৮ অপরাহ্ণ
যশোরের অভয়নগর উপজেলায় মতুয়া সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ: মামলা দায়ের ও গ্রেপ্তার

যশোরের অভয়নগর উপজেলার ডহরমশিয়াহাটী গ্রামে মতুয়া সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনায় প্রায় ১০০-১৫০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ধরা হয়েছে প্রায় ৪৯ লাখ টাকা। ইতোমধ্যে পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে।

মঙ্গলবার (২৭ মে) রাতে ভুক্তভোগী কল্পনা বিশ্বাস অভয়নগর থানায় মামলাটি দায়ের করেন। তিনি নিহত তরিকুল ইসলাম হত্যাকাণ্ডের পর তার বাড়িসহ আশপাশের ১৯টি পরিবারের ওপর হামলার বিস্তারিত তুলে ধরেন।

২২ মে সন্ধ্যায় নওয়াপাড়া পৌর কৃষক দলের সভাপতি তরিকুল ইসলাম খুন হওয়ার পর সুন্দলী ইউনিয়নের বেড়েধা পাড়ায় মতুয়া সম্প্রদায়ের বাড়িগুলোতে দেশীয় অস্ত্র ও পেট্রোল নিয়ে দুর্বৃত্তরা হামলা চালায়। তারা কল্পনা বিশ্বাসের বাড়িসহ আরও ১৮টি বাড়িতে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ এবং লুটপাট করে নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার ও আসবাবপত্র নিয়ে যায়।

কল্পনা বিশ্বাস জানান, তার বাড়িতে হামলায় প্রায় ৪ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। আহত ও ক্ষতিগ্রস্ত অন্য পরিবারগুলো হলো—শংকর বিশ্বাস, মহিতোষ বিশ্বাস, দিলীপ বিশ্বাস, বিষ্ণু বিশ্বাস, প্রতাপ বিশ্বাস, প্রনব বিশ্বাসসহ মোট ১৯টি পরিবার, যারা সবাই একই মতুয়া সম্প্রদায়ের অনুসারী।

অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আব্দুল আলীম জানান, কল্পনা বিশ্বাস বাদী হয়ে মামলা করেছেন। এজাহারে অজ্ঞাতনামা ১০০-১৫০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। এ পর্যন্ত তিনজন—ইমন হোসেন (৩০), রিফাতুল ইসলাম রাতুল (২৩), সাজ্জাদ হোসেন (২৭) কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

তরিকুল হত্যা মামলায় ফিরোজ খান, সাগর বিশ্বাস, দিনেশ ও সুমন নামে চার আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পলাতক অন্য আসামিদের ধরতে অভিযান চলছে।

২২ মে বিকেলে পিন্টু বিশ্বাসের বাড়িতে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে দুর্বৃত্তদের হামলায় তরিকুল ইসলাম নিহত হন। হত্যাকাণ্ডের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর রাতেই উত্তেজিত জনতা পিন্টুর বাড়ি লক্ষ্য করে হামলা চালায়, যা পরবর্তীতে মতুয়া সম্প্রদায়ের ওপর ছড়িয়ে পড়ে।

সেনাবাহিনী, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে হামলার শিকার পরিবারগুলো এখনও চরম আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে।