ফারুক আহমেদের পদচ্যুতি, আইসিসিতে অভিযোগ—বিসিবিতে নতুন বিতর্কের জন্ম

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিবি) ফের নতুন করে উত্তাপ ছড়িয়েছে। বিসিবির সভাপতি ফারুক আহমেদকে সরিয়ে দিয়েছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি)। গত বৃহস্পতিবার রাতে এক অফিস আদেশে এনএসসি ফারুক আহমেদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেওয়ার মাধ্যমে তিনি আর বিসিবির পরিচালক হিসেবে বহাল থাকলেন না। ফলে স্বাভাবিকভাবেই তার সভাপতির পদটিও শূন্য হয়ে গেছে।
এই সিদ্ধান্তের পরপরই গুঞ্জন ওঠে, দেশ ছেড়ে গেছেন ফারুক আহমেদ। তবে সেই খবরকে ‘পুরোপুরি মিথ্যা’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি নিজেই। এক ভিডিও বার্তায় ফারুক বলেন,
‘পুরোপুরি মিথ্যা কথা। যারা আমাকে নিয়ে এতদিন নাটক তৈরি করেছে, এটি তাদেরই আরেকটি পর্ব। আমি দেশেই আছি, গুজবে কান দেবেন না। আগামীকাল সংবাদ সম্মেলন করার চেষ্টা করছি।’
তবে সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, ফারুক আহমেদ এই সিদ্ধান্ত সহজে মেনে নিচ্ছেন না। বরং নিজেকে ‘জোরপূর্বক পদচ্যুত’ দাবি করে বিষয়টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) কাছেও জানিয়েছেন। এক গণমাধ্যমকে তিনি বলেন,
‘আমি এটা আনচ্যালেঞ্জড রেখে দেব না। ফাইট করব, শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়ব। আমার সঙ্গে অন্যায় আচরণ করা হয়েছে।’
তিনি আরও জানান, আইসিসির সেক্রেটারির মাধ্যমে সংগঠনের সভাপতি জয় শাহকে ইতোমধ্যে বিষয়টি জানিয়েছেন। পাশাপাশি আইসিসির আরও ৫–৭ জন পরিচালকের সঙ্গেও ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগ করেছেন বলে দাবি তার।
এর আগে বিসিবির ১০ পরিচালক থেকে ৮ জন ফারুক আহমেদের বিরুদ্ধে একাধিক অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা, ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবর অনাস্থা চিঠি পাঠিয়েছিলেন। সে অনুযায়ীই ফারুকের মনোনয়ন বাতিল করে এনএসসি।
তবে ফারুক আশাবাদী, আইসিসি তার পক্ষে দ্রুত ব্যবস্থা নেবে। তিনি বলেন,
‘আমি নিশ্চিত, আইসিসি দ্রুত অ্যাকশন নেবে। দু’এক দিনের মধ্যেই বিসিবিতে আইসিসির চিঠি আসবে।’
তিনি উদাহরণ দেন শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ডের অতীত ঘটনার, যেখানে সরকার মন্ত্রিসভা কর্তৃক বোর্ড ভেঙে দেওয়ার পর আইসিসি হস্তক্ষেপ করে আগের বোর্ডকে পুনর্বহাল করেছিল।
সব মিলিয়ে, বিসিবিতে আবারও নেতৃত্ব সংকট, অভ্যন্তরীণ বিভাজন ও প্রশাসনিক দ্বন্দ্বের স্পষ্ট চিত্র ফুটে উঠেছে। যখন মাঠের ক্রিকেটে দল বাজে সময় পার করছে, তখন বোর্ডের ভেতরে এ ধরনের অস্থিরতা বাংলাদেশ ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলছে।
আপনার মতামত লিখুন